( উৎসর্গঃ কবি তৃষ্ণা বসাক, বন্ধুভাজনেষু)
তৌফিক জহুর
কৈশোরে আব্বার হাত ধরে বকশি বাজার যাই
মুগ্ধ হই ডালিতে সাজিয়ে রাখা সবজি মাছ মাংস, খাঁচায় মুরগী
আর সরল মানুষগুলোর কেনাবেচায়,
মাঝেমধ্যে আব্বা আশিস কাকার হোটেলে নিয়ে গিয়ে
পরোটা সবজি মিষ্টি আর দুধ চা খাওয়াতেন,
আমিও আব্বার পকেটের আবহাওয়া সংবাদ না জেনেই
শুধু খেয়েই গেছি কৈশোরের ডাংগুলি খেলার মতো,
কৈশোরে জেনেছি কাঁচা ছানা মানেই আশিস কাকা,
বৃষ্টির দিনে ছাতা মাথায় বাজারে যেতাম,
আমার মনে হতো অনেক হাতির কান বাজারে ঘুরছে,
লাল মিয়া চাচার দোকানে আমাকে বসিয়ে আব্বাও
একটা হাতির কান লাগিয়ে মিশে যেতেন ভিড়ে,
তখন আব্বাকে খুঁজতাম, কিন্তু পেতাম না,
শীতের দিনে বকশি বাজারে দেখেছি যুবতী সবজিবাহার
লাউশাক বাঁধাকপি ফুলকপি টমেটো সীম গাজরের
চেহারা জৌলুশে মনে হতো বৈশাখের মেলায় আছি
পৃথিবীর ঋতু পরিবর্তনে
গাছে নতুন পাতা এলো,
বকশি বাজার আমাকে শেখালো জীবনের নামতা,
পকেটের নোটগুলো মনে হলো খলসে মাছ,
বাজারে এলোমেলো কদমে নামতা পড়ছি,
সবকিছু ঠিকঠাক কিন্তু কিছুই ঠিক নেই,
কৈশোরে দেখা আব্বার হাসিমাখা মুখের আড়ালে
বেদনার ঘামগুলো আমার কপাল বেয়ে
নিচে নামছে, নিভিয়ে দিচ্ছে সদ্য জ্বলে ওঠা উনুন
বাবা মানেই পাঞ্জাবির পকেটে বেদনা লুকিয়ে রাখা
সেলাই করা চটি পায়ে একজন আলেকজান্ডার।
এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন