micro-story-doirathe-mon-kandey

দ্বৈরথে মন কাঁদে
মৌ মধুবন্তী

একবার কবি হতে চেয়ে কবিতার কাপে চুমুক দিলাম, ঠোঁট পুড়ে গেল। আরেকবার গল্পের গেলাসে চুমুক দিলাম, শব্দেরা গলায় আটকে গেল।
এইভাবে যেতে যেতে একদিন গভীর বনের মধ্যে পথ হারিয়ে দেখা পেলাম এক অদ্ভুত যুবকের। সে হাত ধরে নিয়ে গেল গানের ভুবনে। গানগুলো আমাকে দেখে দৌড়ে পালালো। চারিদিকে হরেক রকমের সুর ও বেসুর আমাকে বিভ্রান্ত করতে থাকে। আমি শালবন বিহারের কথা ভাবতে ভাবতে প্রাচীন পুঁথির সন্ধান পেলাম। পুঁথির পাতা উল্টাতেই বেরিয়ে আসে করুণ রস, অজগর কাহিনী। মুহুর্তেই আমাকে গ্রাস করে নিলো চন্দ্রগ্রহণ। আমি লুকাতে চেয়ে বার বার প্রকাশ্য রাজপথে পৌঁছে যাই। একদল কুকুর পাশ কাটিয়ে যেতে যেতে ঘেউ ঘেউ করলো। আমি কানের ভেতর একটা নতুন বারান্দা খুলেছি। বারান্দায় কোন পোকামাকড় আসে না। শব্দের প্রতিক্রিয়ায় আমি প্রবল জ্বরে ভুগতে থাকি। এইভাবে যেতে যেতে এক ঘাসফড়িং এসে খবর দিলো, কেউ একজন আমার কবিতা পড়তে চায়, কেউ একজন আমার গল্প পড়তে চায়, কেউ একজন আমার গাওয়া গান শুনতে চায়। আমি প্রাচীন পুঁথির পাতায় নিরেট আটকে থাকি। করুণ রসে সিক্ত হয়ে আটকে থাকি। কেউ আমাকে ছুঁতে পারে না। কারো চাওয়া আমার কাছে ব্যঞ্জনা হয়ে ওঠে না। ময়ূরকণ্ঠী এক রাতের সাথে আমি শুয়ে থাকি জড়াজড়ি করে। ঘুম আসে না। চোখের ভেতর কলঙ্কগাঁথা। সোনার কাঠির খোঁজে যুবকের প্রস্থান। ক্রমেই আমি পাতা থেকে পাতার আড়ালে অশ্রুবেদন হই। মূলত আমি থেকে আমি হয়ে উঠি। এখানেই দূরত্বের সূচনা পর্ব।

এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *