সুমন শামস
ট্রিগারে আঙুল।
শ্রমিকের বুক বিদ্ধ করে বুলেট বেরিয়ে গেছে বিধাতার দিকে।
বিধাতা বিদ্ধ কিনা সে খবর জানা যায় না।
শ্রমিক নিহত, নিউজ পোর্টালে সে খবর রাষ্ট্রময়।
মালিকপক্ষ থাকে না সংবাদে শিরোনামে।
শ্রমিকের লাশ একে একে শিরোনাম থেকে উঠে আসে
রক্তচোখে রোশে সন্ত্রাসে।
এবার ট্রিগারে আঙুল শ্রমিকের।
লাল সন্ত্রাসে বিদ্ধ এবার পুঁজিপতির বুক।
খবর এসেছে বিধাতাও আহত এবার।
সুতরাং আবারো শিরোনামে উঠে এলো বিপ্লবী শ্রমিকের মুখ।
সুমন শামস
ভালো মানুষের জায়গা পৃথিবীতে নেই। কবরে আছে কি বাবা!
তোমার পাশে কবরস্থ লোকটা তার কবরের সীমানা ঠেলে তোমাকে উচ্ছেদের পাঁয়তারা করে না তো। কবর পলিটিক্সে তোমার মতো গোবেচারার সবকিছু কেড়ে নিতে চায় না তো কেউ। সামান্য একটি চেয়ারের জন্য পৃথিবীতে যেমন দাঁতাল শুয়োরের নর্তন কুর্দন; কবরে নেই কি তেমন শুয়োরীয় আয়োজন, ইঁদুরবেড়াল সাপেনেউলে খেলা, মিছিল মিটিং আন্দোলন। কবরে কি আছে নেতাতন্ত্রের দৌরাত্ম, ক্ষুব্ধ খোঁচাখুঁচি, প্রাসাদ ষড়যন্ত্র, সন্ত্রাস ও ধর্ষণ; অন্ধকানুন ও আইনের মারপ্যাঁচ। ওখানে পরাগের শীর্ষে বিষ ঢেলে দিতে আসে না কি কোনো কীট, গোলামীনামায় ঝুলে থাকে না কি মানুষের লাশ।
কবর কি একটা দেশ। ওখানে আছে কি রক্তবর্ণ পতাকা, মানচিত্র কিংবা স্বাধীনতা। আছে কি কোনো তন্ত্র, মন্ত্র, মতবাদ, মানব সভ্যতার ইতিহাস। লৌহপ্রস্তর যুগ অথবা জুরাসিক যুগের বিলুপ্ত প্রাণীর কঙ্কাল। আচ্ছা বাবা, কবরে মানুষ কি বিপ্লবী স্লোগান তোলে। চে-ক্যাস্ট্রো-লেনিন-স্টালিন ওরা কি এখনো সাম্যবাদের কথা বলে ওখানে। ফরাসি ও রুশ বিপ্লবের মতো ঘটেছিলো কি কোনো রেনেসাঁস, প্রবল পুনরুত্থান। না কি বাজার সিন্ডিকেটে টিসিবির লাইনে কেবল লম্বা হয়েছিলো সেখানে তৃতীয় বিশ্বের ধারণা। রেমিট্যান্স জিডিপি মুদ্রাস্ফীতি তথা বিশ্বঅর্থনীতি ওখানে কেমন।
ধর্ম দর্শন ও বিজ্ঞানের ধারণাই বা কীরূপ ওখানে। মানুষ বেঁচে থাকে প্রজ্ঞা ও চেতনায়। কবরেও কি মানুষ তেমনই থাকে। সিরাজ-লালন-কবিরেরা কি ওখানে বেঁচে আছেন বাবা। একটা সলজ্জ জিজ্ঞাসা তোমাকে, শুনেছি কবরেও থাকে সংগম অনুভূতি। ওখানে কি নেই তবে পরকীয়া, মানবিক বিয়ে ও বিচ্ছেদ। প্রেয়সীর চুলের স্তবক আলগা হলে ওখানে কি কেউ লেখে না কবিতা। গায় না কি গান।
যদি তার উত্তর হয় – না!
তাহলে কবরে তুমি কীভাবে বেঁচে আছো বাবা!
এই পৃষ্ঠাটি লাইক এবং শেয়ার করতে নিচে ক্লিক করুন